Thursday, October 10, 2024

The Significance of Durga Ashtami and Sandhi Puja: A Sacred Union of Power and Devotion

 দুর্গাপূজার অষ্টমী তিথি হল পঞ্চম দিনের পূজা, যা শক্তির মহিমা ও ভক্তির মিলন ঘটায়। অষ্টমীকে দুর্গাপূজার অন্যতম পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে ধরা হয়, কারণ এই দিনে দেবী দুর্গার মহা গৌরবময় রূপের পূজা হয়। সকাল থেকেই পূজার্চনা, অঞ্জলি, এবং ভোগ নিবেদন শুরু হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো কুমারী পূজা, যেখানে কুমারী বালিকাকে দেবীর রূপে পূজা করা হয়।




 

অষ্টমীর পৌরাণিক গুরুত্ব: 

এই অষ্টমীটি রয়েছে এক পৌরাণিক গুরুত্ব মনে করা হয় যে এই অষ্টমী তিথিতেই মা দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। তাই এই দিন ভক্তরা পুষ্পাঞ্জলির মাধ্যমে দেবীর আরাধনা করেন।

অষ্টমীর গুরুত্ব:

অষ্টমী তিথি দুর্গাপূজার বিশেষ আকর্ষণ। এই দিনে ভক্তেরা পূর্ণভাবে তাঁদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অষ্টমীর অঞ্জলিতে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, এবং ঢাকের বাজনা যেন ভক্তদের মনোযোগ আর ভক্তিকে দেবীর চরণে নিবেদন করে। দেবী চামুণ্ডার মহাশক্তির পূজা হয় এই দিনে।

সন্ধি পূজার পৌরাণিক কাহিনী: 

পুরাণ মতে বলা হয় যে মা দুর্গা এক অপরূপ সুন্দরী নারীর বেশে মহিষাসুরের সামনে এসেছিলেন। দেবীর দশ হাতে ছিল দশটি অস্ত্র। গায়ের বর্ণ ছিল স্বর্ণাভ। মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালীন মহিষাসুরের দুই সহজাত পেছন থেকে দেবীকে আক্রমণ করেন। সম্মুখে যুদ্ধ না হওয়ায় রেগে যান মহামায়া। রেগে দেবীর মুখ হয়ে ওঠে নীলাভ। মহামায়া ক্রধান্বিত হয়ে চামুন্ডা রূপ ধারণ করেন। এইরূপে দেবী মহিষাসুরের দুই সহযাত চন্ড ও মুন্ডের মাথা কেটে নেন। দেবীর এই চামুন্ডা রূপেরই পুজো করা হয় সন্ধি পূজার সময়। এই পূজার মূল আকর্ষণ হল যখন দেবী দুর্গা দেবী চামুণ্ডার রূপ ধারণ করেন এবং অসুরদের বিনাশ করেন। শাস্ত্র অনুযায়ী, মহিষাসুরকে বধ করার সময় সন্ধি পূজার এই মুহূর্ত ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।মা দুর্গার অনেকগুলি রূপের মধ্যে অন্যতম হলো মহিষাসুরমর্দিনী। মহিষাসুরকে বধ করে তিনি হয়েছেন মহিষাসুরমর্দিনী। যার সঙ্গে যোগ রয়েছে সন্ধিপুজের।


                             

সন্ধি পূজা: দুটি তিথির সন্ধিক্ষণ:

সন্ধি পূজা হল অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে করা বিশেষ পূজা, যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং মহিমাময়। সন্ধি পূজা হয় অষ্টমী শেষের ২৪ মিনিট এবং নবমী শুরুর ২৪ মিনিট, মোট ৪৮ মিনিটের মধ্যে। এই সময় দেবীর ১০৮টি প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং ১০৮টি পদ্মফুল দিয়ে পূজা করা হয়। ভক্তরা মনে করেন, এই সময়ে দেবীর আশীর্বাদ পাওয়া সব থেকে শুভ।


সন্ধি পূজার ঐতিহ্য ও রীতি:

সন্ধি পূজায় সাধারণত ১০৮টি প্রদীপ জ্বালিয়ে দেবীকে আহ্বান করা হয় এবং তাঁর কাছে ভক্তি নিবেদন করা হয়। অনেক পরিবার ও মণ্ডপে বলির প্রথাও মানা হয়। যদিও আজকাল বলির পরিবর্তে সবজি বা ফলের বলি দেওয়ার রেওয়াজ প্রচলিত হয়েছে। সন্ধি পূজা দেবীর অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীক হিসেবে উদযাপন করা হয়, যা ভক্তদের নতুন শক্তি ও আশীর্বাদ প্রদান করে।

১০৮ প্রদীপ ও ১০৮ পদ্ম এর ইতিহাস:

কৃত্তিবাস ওঝার রামায়ণে উল্লেখ আছে লঙ্কার রাজ রাবণকে বধ করার জন্য রামচন্দ্র দেবীর অকালবোধন করেছিলেন। সেখানেও সন্ধি পুজোর বিশেষ খনে ১০৮ টি পদ্ম নিবেদন করা হয়েছিল। সেই সময় হনুমানকে ১০৮ টি পদ্ম তুলে আনতে বলা হয়, কিন্তু পুজোর সময় রামচন্দ্র দেখছেন ১০৭ পদ্মফুল পড়ে রয়েছে। একটি পদ্ম না পেয়ে রামচন্দ্র নিজের পদ্মসম চোখ মা দুর্গাকে উৎসর্গ করতে চান। আসলে একটি পদ্ম সরিয়ে নিয়েছিলেন মা নিজেই। যখন রামচন্দ্র নিজের চোখ উৎসর্গ করতে যান তখনই আবিভূত হন মা দূর্গা। তিনি আবির্ভূত হয়ে রামচন্দ্রকে বর দান করেন যে তিনি রবনের থেকে সমস্ত সুরক্ষা সরিয়ে নেবেন। ষষ্ঠীর দিন রামচন্দ্র পূজা শুরু করেন, অষ্টমী ও নবমী তিথির মাঝে রামচন্দ্রের অস্ত্র প্রবেশ করে, দশমীতে হয় রাবণ বধ। সেই সময় থেকে সঞ্জীব পুজোর মূল নৈবেদ্য হলো পদ্ম। তাই জন্য ১০৮  টি পদ্ম, ১০৮ বেলপাতা ও ১০৮ প্রদীপ পুজোতে ব্যবহার করা হয়।


                    

উপসংহার:

দুর্গা অষ্টমী এবং সন্ধি পূজা বাঙালির হৃদয়ে এক বিশাল স্থান অধিকার করে আছে। দেবীর কাছে প্রার্থনা করা হয় যাতে তিনি জীবনের সকল অশুভ শক্তির বিনাশ করে শুভের বিজয় ঘটান। শক্তি, ভক্তি এবং মহিমার এই পূর্ণতা উপলব্ধি করাই অষ্টমী ও সন্ধি পূজার মূল উদ্দেশ্য।





2 comments:

  1. লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো! খুব সুন্দর হয়েছে!

    ReplyDelete

Psychological Flow While Reading Books: Exploring the Reader's Journey Through Bengali And English Classics and Poetry

  বই পড়ার সময় মনস্তাত্ত্বিক প্রবাহ: বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যের প্রভাব এবং পাঠকদের মানসিক জগৎ ভূমিকা: বই পড়া মানেই কেবল গল্প বা জ্ঞান আহরণ ন...